ইমাম হোছাইন, তিতাস:
কুমিল্লার তিতাসে চাচির অনৈতিক সম্পর্ক দেখে ফেলায় ৭ বছরের শিশু আরিয়ান হোসেন সায়মন হত্যা ও গুমের ঘটনায় বিল্লাল পাঠান নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ঘটনায় নিহতের চাচি শেফালী বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক সাব্বির মাহমুদ চৌধুরী এই রায় দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. ইকরাম হোসেন।
পরিবার ও আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৬ আগস্ট বিকেলে নিহত সায়মন খেলতে গিয়ে আর বাড়ি আসেনি। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে ছেলেকে না পেয়ে (১৮ আগস্ট) ছেলের সন্ধান চেয়ে তিতাস থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার মা খোরশেদা বেগম। এর পরদিন (১৯ আগস্ট) সকালে বজলুর রহমানের বালুর মাঠের ঝোপের ভেতর থেকে সায়মনের পোড়া মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় সায়মনের মা খোরশেদা আক্তার চাচি শেফালী বেগম এবং অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশেন তদন্তে বিল্লাল পাঠানের নাম উঠে আসে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে আসামি শেফালী বেগম ও বিল্লাল পাঠানকে গ্রেফতারের পর আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।
অভিযোগপত্র দায়ের ও দীর্ঘ শুনানি শেষে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর আসামি বিল্লাল পাঠানকে মৃত্যুদণ্ড এবং সায়মনের চাচি শেফালী বেগমকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। একইসঙ্গে তাদেরকে ১ লাখ টাকা করে জরিমানারও আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও দুজনকেই মরদেহ গুমের অভিযোগে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানার সাজাও ঘোষণা করেন বিচারক।
মামলার বাদী ও নিহত সাময়নের মা খোরশেদা আক্তার বলেন, ‘ আসামিরা হুমকি ও তাদের পক্ষে নিয়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও চেষ্টা করেছিলো এই মামলা থেকে আমাকে সরে যেতে, লক্ষ লক্ষ টাকার লোভও দেখিয়েছে। কিন্তু আমি চ্যালেঞ্জ করেছিলাম আমি লড়বো। আজ আমি আদালতের এই রায়ে সন্তুষ্ট। তবে রাষ্ট্রের কাছে দাবি আমার সন্তান হত্যাকারীদের শাস্তি যেন দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়। যা দেখে দেশের মানুষ সতর্ক হতে পারে এবং এই ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকে। এদিকে আরিয়ান হোসেন সায়মন হত্যার রায়ে স্থানীয়রাও সন্তুষ্ট পোষণ করেছেন। দ্রুত সময়ে এই রায় কার্যকর করার দাবিও জানান তারা।












