কুমিল্লাবুধবার, ১৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দাউদকান্দিতে ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৩, পৌরসভা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা

প্রতিবেদক
Palash Khandakar
জুন ১৭, ২০২৫ ১:২১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ডেস্ক রিপোর্ট:

দাউদকান্দি পৌরসভায় দিন দিন বেড়েই চলছে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে শত শত মানুষ। নিহত রুগীর সংখ্যাও একাধিক। গত ২৪ ঘণ্টায় তিন রোগী মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।

নিহতরা হলেন, দোনারচর গ্রামের মান্নানের ছেলে ইউসূফ আলী, নাজির চৌধুরীর স্ত্রী মাকসুদা বেগম ও রাসেলের স্ত্রী শাহিনুর আক্তার।

দাউদকান্দি পৌরসদরের ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড দুটিতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মহামারী পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। দাউদকান্দি পৌর প্রশাসন এই দুটি ওয়ার্ডকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে।

পৌর স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দাউদকান্দি পৌরসদরে ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দোনারচর, সবজিকান্দি, দাউদকান্দি, সাহাপাড়া, বলদাখাল ও তুজারভাঙ্গা গ্রামগুলোতে দ্রুত বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা।

প্রতিটি পরিবারের কোনো না কোনো সদস্য আক্রান্ত হচ্ছেন। ওয়ার্ড দুটিতে আক্রান্তের সংখ্য প্রায় ৬ শতাধিক। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী নারী, পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধসহ নানান বয়স এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন।
মে মাস থেকে এই পর্যন্ত উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে প্রায় ৩ শতাধিক রোগী এবং রাজধানীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত হয়েছেন ৩ জন।

এতে পুরো পৌরসভা জুঁড়ে ডেঙ্গু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের মাঝে এক ধরনের ভীতি ও অস্থিরতা বিরাজ করছে।

পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর বিল্লাল হোসেন খন্দকার সুমন বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে ডেঙ্গু পরিস্থিতি অস্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমরা ঝোপঝাড় পরিষ্কার, জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করছি ও ফগার মেশিন দিয়ে ওষুধ ছিটানো হচ্ছে। আমার ওয়ার্ডসহ পাশের ওয়ার্ডের ৪ জন নিহত হয়েছেন।

৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সালাহউদ্দিন সরকার বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৩ জন নিহত হয়েছেন। আরো শতাধিক আক্রান্ত হয়েছেন।’

পৌরসভার সমাজকর্মী তৌফিক রুবেল বলেন, ‘ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর সচেতনতায়, লিফলেট বিতরণ, মাইকিং ও ওষুধ বিতরণ করছি।’

দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুর রহমান জানান, ‘জুন মাস থেকে এই পর্যন্ত হাসপাতালে ১০২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। তারমধ্যে উন্নত চিকিৎসার জন্য ২৮ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও উপজেলার বেসরকারি হাসপাতাগুলোতে ২৫৮ জন রুগী চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। ডেঙ্গু রুগীদের তাৎক্ষণিক সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।’

দাউদকান্দি পৌর প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদওয়ান ইসলাম জানায়, ‘আমরা পৌরসভার পক্ষ থেকে দুটি ওয়ার্ডকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করেছি। প্রতিদিন ডেঙ্গু মশার বিস্তার রোধে মশক নিধন কর্মসূচি গ্রহণ করছি। ফ্রগার মেশিনের মাধ্যমে উচ্চমাত্রার ওষুধ প্রয়োগ করছি।’