কুমিল্লাবৃহস্পতিবার, ১০ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কুমিল্লায় ভুয়া চিকিৎসকের মাধ্যমে সিজারে নবজাতকের মৃত্যু

প্রতিবেদক
Palash Khandakar
আগস্ট ১৮, ২০২৩ ৮:৪১ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার:

কুমিল্লা তিতাস মেডিকেল সেন্টারে ভুয়া চিকিৎসকের মাধ্যমে সিজারে নবজাতকের মৃত্যু ও মায়ের জরায়ু কাটার অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ঘটনায় বুধবার দুপুরে হাসপাতালের চেয়ারম্যানসহ ৫ জনের নামে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিরা হলো, তিতাস মেডিকেল সেন্টারে চেয়ারম্যান পিন্টু কুমার দাস, ব্যবস্থাপনা পরিচালক বশির খন্দকার, পরিচালক আওলাদ হোসেন, পরিচালক খোরশেদ আলম এবং ভুয়া চিকিৎসক তাসলিমা রেজভী লাইলী।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. তোফায়েল হোসেন।

গত ৭ আগস্ট সকালে দেবিদ্বার পিরোজপুর গ্রামের মোশাররফ তার স্ত্রী বিথির প্রসবের ব্যথা নিয়ে কুমিল্লার তিতাস মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে এলে হাসপাতালের দায়িত্বরত তাসলিমা রেজভী লাইলি নিজেকে গাইনি ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগীকে ভর্তি করেন। দুপুরে ভুয়া চিকিৎসক তাসলিমা রেজভী ভুক্তভোগীর সিজার করে। এ সময় ভুক্তভোগীর মৃত্যু মেয়ে বাবু ভূমিষ্ঠ হয়।

ভুক্তভোগী বিথির স্বামী মোশাররফ জানান, ‘দুপুরের দিকে ভুয়া চিকিৎসক তাসলিমা রেজভী আমাকে এসে বলে আমার মৃত্যু মেয়ে সন্তান হয়েছে। এখন বিথির অবস্থা খারাপ। তার পেটে দুটো বড় টিউমার রয়েছে জরুরি আরেকটি অপারেশন করতে হবে। এখন অপারেশন না করলে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।

কথিত এই চিকিৎসক আমাকে আরও বলেন আমার স্ত্রীর জরায়ু কেটে ফেলতে হবে। এ জন্য ২৭ হাজার টাকা নেন এবং আমার স্ত্রীর জন্য ১৬ ব্যাগ রক্ত যোগাড় করতে বলেন। আমি আমার স্ত্রীকে বাঁচাতে হাসপাতাল থেকে দেয়া একটা পেপারে সাইন করি। দ্বিতীয় বার অপারেশন করে এই কথিত চিকিৎসক আমার বউয়ের জরায়ু কেটে ফেলে। এ সময় আমার স্ত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে আমরা তাকে মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যাই।

তার দুইদিন পর মোশাররফ ও তার পরিবার লিখিত অভিযোগ নিয়ে জেলা সিভিল সার্জনের সঙ্গে দেখা করে। এ সময় ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য সিভিল সার্জন ডা. নাসিমা আক্তার ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। চান্দিনা উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাসিনা আক্তারকে প্রধান করে তদন্তের রিপোর্ট ৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে বলেন।

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাসিম আক্তার জানায়, ‘আমরা এ ঘটনা সম্পর্কে জেনে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। ৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট আমরা পাব। পরবর্তীতে আমরা দোষীদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসব।’

তবে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ভুক্তভোগীর স্বামী মোশাররফ বাদী হয়ে ভুয়া চিকিৎসকসহ হাসপাতালের চেয়ারম্যান পরিচালক মোট ৫ জনের নামে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মেহনাজ রহমানের আদালতে মামলা দায়ের করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. তোফায়েল হোসেন বলেন, মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে হাসপাতালে ৫ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।

এ ঘটনার সত্যতা জানতে তিতাস মেডিকেল সেন্টারে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো বক্তব্য দেয়নি।