কে জানতো, এটিই তাদের শেষ যাত্রা হবে। বরিশালের বাসিন্দা রিপনের স্ত্রী আইরিন আক্তার বেড়াতে এসেছিলেন বাবার বাড়ি ঝালকাঠিতে। তিনি দুই বছরের মেয়ে রিপাকে নিয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন শ্বশুর বাড়ি। এ সময় বোন ও আদুরে ভাগনিকে তুলে দিতে যান নয়ন (১৬)। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজাপুর থেকে বরিশালগামী বাশার স্মৃতি বাসটিতে ওঠেন তারা তিনজন।
দুর্ঘটনার কিছুক্ষণ পর খবর পেয়ে প্রথমে বড় ভাই রুবেল ছুটে যান ঘটনাস্থল ছত্রকন্দায়। কিন্তু সেখানে না পেয়ে আইরিনের সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোন দেন, তখন ফোনটি বন্ধ পান তিনি। এরপর ছুটে আসেন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে।
সেখানেই তিনজনের লাশ খুঁজে পান ১৭ জনের মধ্যে। আত্মার ধন তিনজনের লাশ একসঙ্গে দেখে পাগলপ্রায় রুবেলের গগন বিদারী আর্তনাদে ভারী হয়ে ওঠে সদর হাসপাতাল।
কান্নারত অবস্থায় রুবেল বলেন, ‘তোগোর এইটাই শ্যাষ বিদায় বুঝলে যাইতে দিতাম না। এ্যা কি হইলো রে….আল্লাহ….আমাগোর সব শ্যাষ কইরা দিয়া গ্যালা।’ পাশেই বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন তার আরেক ভাই।
উল্লেখ্য, ভান্ডারিয়া থেকে বাশার স্মৃতি পরিবহণ যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে ১০টার দিকে। ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছত্রকান্দা নামক এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুকুরের মধ্যে পড়ে যায় বাসটি। এতে এখন পর্যন্ত ১৭ জন নিহত ও ৩৫ জন আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ১৫ জন হলো- তারেক রহমান, ছালাম মোল্লা, খাদিজা বেগম, খুশবু আক্তার, আবুল কালাম হাওলাদার, রিপা মনি, আইরিন আক্তার, নয়ন, রাবেয়া বেগম, সালমা আক্তার মিতা, সাদিয়া আক্তার, শাহীন মোল্লা, সুমাইয়া, আব্দুল্লাহ ও রহিমা বেগম। বাকি দুই জনের পরিচয় এখনো শনাক্ত হয়নি।
দুর্ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানায় জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম।