কুমিল্লাসোমবার, ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

স্বৈরাচার হাসিনা পালিয়েছেন ভারতে, অলি যাচ্ছেন কোথায়?

প্রতিবেদক
Palash Khandakar
সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৫ ৭:৪০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ডেস্ক রিপোর্ট-


জুলাইয়ে ৩৬ দিনের আন্দোলনের মুখে ভারতে পালিয়েছিলেন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা। এবার মাত্র কয়েকদিনের ভয়াবহ বিক্ষোভেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। তিনিও দেশ ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা করছেন। তবে কোথায় যাবেন তা এখনো জানা যায়নি।

স্থানীয় গণমাধ্যম ও কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে ফার্স্টপোস্ট জানিয়েছে, তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন। তার গন্তব্য হতে পারে দুবাই।

ইন্ডিয়া টুডে বলছে, পদত্যাগের আগে তিনি দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেলের সঙ্গে ফোনালাপ করেন এবং তার আহ্বানেই পদত্যাগ করেন তিনি। এছাড়াও তিনি দেশ থেকে নিরাপদে বের হওযার জন্য সেনাবাহিনীর সহায়তাও চেয়েছেন। সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেল প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলিকে পদত্যাগের আহ্বান জানান।

অফিশিয়াল সূত্রের বরাতে ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, অলি চিকিৎসার অজুহাতে দুবাই যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন এবং বেসরকারি বিমানসংস্থা ‘হিমালয়া এয়ারলাইনস’কে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

দেশজুড়ে জেন-জি নেতৃত্বাধীন আন্দোলন সোমবার সহিংস রূপ ধারণ করেছে। এ দিন পুলিশের গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত হওয়ার পর বিক্ষোভকারীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। মঙ্গলবার রাজধানী কাঠমান্ডুসহ বিভিন্ন স্থানে তারা আগুন ধরিয়ে দেয় শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িঘরে।

আগুনে পুড়েছে সদ্যসাবেক প্রধানমন্ত্রী অলির বাড়ি, কংগ্রেস নেতা শের বাহাদুর দেউবার বাড়ি, প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল এর বাসভবন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক এর বাড়ি, মাওবাদী নেতা পুষ্প কমল দাহাল প্রচণ্ড এর বাসভবন।

এছাড়া দেউবার স্ত্রী ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরজু দেউবা রানার মালিকানাধীন একটি বেসরকারি স্কুলেও আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা।

কেবল নেতাদের বাড়িই নয়, ক্ষোভের আগুন পৌঁছেছে ক্ষমতার কেন্দ্রে। বিক্ষুব্ধ জনতা সংসদ ভবনের ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেয়, পাশাপাশি ঢুকে পড়ে সিংহদরবার প্রাঙ্গণে। ভেঙে ফেলা হয় পশ্চিম দরজা, গেটে আগুন ধরিয়ে দিয়ে তারা প্রশাসনিক কমপ্লেক্সের ভেতরে প্রবেশ করে।

আন্দোলনকারীদের অভিযোগ— বহু দশকের দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও নেতৃত্বহীনতার কারণে দেশ অচল হয়ে পড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত ছিল শুধু আগুনে ঘি ঢালা। সরকারের সিদ্ধান্তে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়লেও এর ভেতরে জমা হয়ে থাকা ক্ষোভই এখন বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।

এক ছাত্র, বিষ্ণু থাপা ছেত্রী বলেন, দেশে দুর্নীতি এত বেড়েছে যে আমাদের মতো তরুণদের আর কোনো ভবিষ্যৎ নেই। আমরা শান্তি চাই, দুর্নীতি মুক্ত দেশ চাই, যাতে এখানেই কাজ করতে ও বাঁচতে পারি।

অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপে মঙ্গলবার সকালে সরকার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও আন্দোলনকারীরা তা মানতে নারাজ। তারা বলছে, শুধু ফেসবুক–ইউটিউব খোলার মধ্যে সমাধান নেই— দরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে বাস্তব পদক্ষেপ ও দায়ীদের জবাবদিহি।