ডেস্ক রিপোর্ট:
বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য মাঠে সেনাবাহিনী কতদিন থাকবে, তা নির্ধারণ করবে অন্তর্বর্তী সরকার। বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান সেনাসদরের কর্নেল স্টাফ কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে সরকারের সিদ্ধান্তে এবং কতদিন তারা মাঠে থাকবে, তা সরকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীল।
সেনাবাহিনী মোতায়েনের সময়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন বা নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে কিনা, এবং এ বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, “মানবাধিকার লঙ্ঘন বা বিচারবহির্ভূত হত্যার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী অত্যন্ত সচেতন। আমাদের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশনা রয়েছে যে, যেকোনও পরিস্থিতিতে যেন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত না হয়। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা যাতে না ঘটে, সে বিষয়েও আমরা সতর্ক আছি।”
৫ আগস্টের পর থেকে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণেও সেনাবাহিনী কাজ করছে। যদিও ট্রাফিক পুলিশ সক্রিয় আছে, তবুও ট্রাফিক ব্যবস্থা এখনও সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অনেক অগ্রাধিকার দিতে হয়। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের মূল দায়িত্ব পুলিশের, তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয় প্রয়োজন। প্রয়োজনে আমরা সহায়তা করতে প্রস্তুত। আমাদেরও মনে হয়, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার স্থায়ী সমাধান দরকার।”
বেতন বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে গার্মেন্টস শিল্পে সংকট চলছে। প্রায় প্রতিদিনই শ্রমিকরা বিভিন্ন পোশাক কারখানায় বিক্ষোভ করছেন।
এ বিষয়ে কর্নেল ইন্তেখাব জানান, সরকার পতনের পর বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে ৬০০-র বেশি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। কারখানাগুলো চালু রাখতে মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার ফলে বর্তমানে ২০৮৯টি গার্মেন্টস কারখানার মধ্যে প্রায় সবগুলো চালু রয়েছে। এর পাশাপাশি ৭০০-র বেশি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
‘জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার’ অভিযোগে চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াউল হক জিয়ার সাম্প্রতিক নির্দোষ দাবির বিষয়ে কর্নেল ইন্তেখাব বলেন, “এ বিষয়ে এই মুহূর্তে সেনাবাহিনীর কাছে কোনও তথ্য নেই। তথ্য পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রেস ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়, গত তিন মাসে ছয় হাজারের বেশি অবৈধ অস্ত্র ও প্রায় ২ লাখ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। এ সময়ে প্রায় আড়াই হাজার জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।