২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত এবং চাকুরীচ্যুত বিডিআর সদস্যদের পুনর্বহালের দাবিতে কুমিল্লার জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্যরা। বুধবার দুপুরে অর্ধশতাধিক বিডিআর সদস্য জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়সারের হাতে এই স্মারকলিপি তুলে দেন।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় পরিকল্পিতভাবে যে হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়, তার সঠিক তদন্ত এবং ঘটনায় চাকুরীচ্যুত সকল বিডিআর সদস্যকে পুনর্বহাল করতে হবে। তারা দাবি করেন, তৎকালীন সরকার একটি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ রাইফেলসকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে এই হত্যাকাণ্ডের আয়োজন করে, যেখানে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান। সেই সময়কার সরকার প্রহসনের বিচার পরিচালনার নামে আলামত নষ্ট করে এবং ৫৪ জন নিরীহ বিডিআর সদস্যকে নিরাপত্তা হেফাজতে হত্যা করে।
তাদের আরও দাবি, এই হত্যাকাণ্ডকে তথাকথিত বিদ্রোহ না বলে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে ঘোষণা করতে হবে এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের অধীনে পরিচালিত বিশেষ আদালতগুলো বাতিল করতে হবে।
বিডিআর সদস্যরা কয়েকটি দাবি উত্থাপন করেছেন:
১. ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারির পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে বিদ্রোহ নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
২. গঠিত বিশেষ আদালতগুলো বাতিল করতে হবে।
৩. চাকুরীচ্যুত বিডিআর সদস্যদের পুনর্বহাল ও সুযোগ-সুবিধা ফিরিয়ে দিতে হবে।
৪. পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মোটিভ ও কুশীলবদের সনাক্তকল্পে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
৫. নিহত সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে শহীদের মর্যাদা প্রদান করতে হবে।
৬. ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে।
৭. নির্যাতনের শিকার হয়ে নিহত বিডিআর সদস্যদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসন দিতে হবে।
৮. তদন্তে জড়িত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৯. প্রহসনের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্যদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কজ বড়ুয়া জানিয়েছেন, এই স্মারকলিপি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করা হবে।