ভাঙনের পরও গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যার ফলে বাঁধ দিয়ে চুইয়ে পানি বের হচ্ছে। এ নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে উদ্বেগের শেষ নেই। রবিবার কুমিল্লার গোমতী নদীর বিবির বাজার, চানপুর এবং ভাটপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায় যে, স্বেচ্ছাসেবীরা নদী রক্ষা বাঁধে কাজ করছেন।
কয়েকদিন ধরে কুমিল্লা শহরতলীর শুভপুর, চান্দপুর, কাপ্তান বাজার ও ভাটপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষজন আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। গোমতীর বাঁধ ভেঙে শহরে পানি ঢুকতে পারে, এমন আশঙ্কায় তারা ঘুমহীন রাত পার করছেন। শনিবার দুপুরে গোমতী নদীর ছত্রখিল এলাকায় ফাটল দেখা দিলে, স্থানীয় যুবকরা মাটি দিয়ে সেই ফাটল বন্ধ করার চেষ্টা করেন। একই রাতে শহর রক্ষাবাঁধের অরণ্যপুর ও চানপুর এলাকায় বাঁধ দিয়ে চুইয়ে পানি বের হতে শুরু করে। এ সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে, যার ফলে জনমনে আতঙ্ক আরও বাড়ে।
কালিয়াজুরী এলাকার সুরাইয়া আক্তার জানায়, নদী রক্ষা বাঁধের পাশেই তাদের ঘর। টিভিতে দেখেছেন একতলা বাড়ি পর্যন্ত বন্যার পানিতে ডুবে যাচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরে গোমতী নদীর পানি বেরিয়ে যাওয়ায় ঘুমাতে পারেন না। কখন জানি নদী ভেঙে তাদের বাড়িঘর সব তলিয়ে যায়, সেই চিন্তায় আছেন।
মোগলটুলি এলাকার বাসিন্দা আজমল হোসেন বলেন, গোমতীতে যে পরিমাণ পানি দেখেছেন, তিনি তার জীবনের ৭০ বছর বয়সে এরকম পানি আর কখনো দেখেননি। গত এক সপ্তাহ ধরে নদীর পাড় ভেঙে যাবে বলে শুনছি, এতে তাদের খাবার-দাবার ঘুম নিন্দ্রা সব হারাম হয়ে গেছে।
নগরীর কান্দিরপাড় এলাকার বাসিন্দা আব্দুস সোবহান বলেন, গোমতী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় শহররক্ষা বাঁধও নরম হয়ে গেছে। যে কোন মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে বলে কেউ কেউ বলছেন। এই ঘটনা শোনার পর থেকে আমাদের সারাদিন কাটে দুশ্চিন্তায়, রাতে ঘুমাতে পারি না।
কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান জানান, গোমতী নদীর পানি এখনো বিপদসীমার ৮১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ পানি ১ সেন্টিমিটার কমে আবার ১ সেন্টিমিটার বেড়েছে। অর্থাৎ গোমতীর পানি প্রবাহ অপরিবর্তিত রয়েছে।