ডেস্ক রিপোর্ট:
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিলের রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সকল আসামি খালাস পেয়েছেন। এছাড়া মামলার অভিযোগপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আজ রোববার (১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার কিছু আগে রায় পড়া শুরু হয় এবং আদালত সব আসামিকে খালাস দেন। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
গত ২১ নভেম্বর এই মামলায় খালাস চেয়ে করা আসামির আপিল ও ডেথ রেফারেন্স শুনানি শেষ হয়। এর আগে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর, বিচারিক আদালত ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা আশা করেছিলেন যে, যারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছে, তারা সবাই খালাস পাবেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানী বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হন এবং অন্তত ৪০০ জন আহত হন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা হয়। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুনভাবে এই মামলাগুলোর তদন্ত শুরু করে। ২০০৮ সালে পুলিশ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ২২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। এতে বলা হয়, শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছিল। পরে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে মামলার অধিকতর তদন্ত হয় এবং তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
শুনানির সময়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এসএম শাহজাহান বলেন, এই মামলার দ্বিতীয় অভিযোগপত্রে যাদের আসামি করা হয়েছে, সেটি আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ, প্রথমে এটি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জমা দেওয়া হয়নি, সরাসরি জজ আদালতে দায়ের করা হয়, ফলে এটি ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী গৃহীত হতে পারে না। উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশের সুপ্রিমকোর্ট ও হাইকোর্টের নজির অনুযায়ী, যদি কোনো মামলায় আসামির বিরুদ্ধে প্রমাণিত কিছু না থাকে এবং যথাযথ তদন্ত না হয়, তবে সব আসামি খালাস পেলে, যারা আপিল করেননি, তাদেরও রায়ের সুবিধা পাওয়া উচিত।
শুনানিতে তিন আসামির আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, মুফতি হান্নানের দ্বিতীয় জবানবন্দির ভিত্তিতে যে অধিকতর তদন্ত হয়েছে, তার আইনগত ভিত্তি নেই। সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ ছাড়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সাজা দেওয়া হয়েছে। এই মামলায় আসামিদের স্বীকারোক্তি নির্যাতনের মাধ্যমে আদায় করা হয়েছে, যা শুনানিতে তুলে ধরেন। এসব দিক বিবেচনায় আসামিদের খালাসের আবেদন জানানো হয়।