২০১১ সালে কুমিল্লা ব্রাহ্মণপাড়ার ছোট ধুশিয়া এলাকায় সমাজকর্মী নুরুল হক হত্যা মামলায় ৬ জনকে মৃত্যদন্ড ও ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। এই সময় দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের ৫০ হাজার টাকা করে নগদ অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়। বুধবার বেলা সাড়ে ১২ টায় কুমিল্লা জেলা ও দায়রা চর্তুথ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এই রায় দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন মো: মাসুম (পলাতক) তাজুল ইসলাম (পলাতক) মোহাম্মদ মোস্তফা (পলাতক), আব্দুল কাইয়ুম (উপস্থিত) আব্দুল কাইয়ুম (পলাতক), তবদল হোসেন (উপস্থিত)
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মোহাম্মদ নানু মিয়া (উপস্থিত), মোঃ আব্দুল মতিন (উপস্থিত), মাইদুল ইসলাম (পলাতক)
বাবুল মিয়া (উপস্থিত) শফিকুল ইসলাম (উপস্থিত), মোসলেম মিয়া (উপস্থিত), শফিকুল ইসলাম (উপস্থিত), মো: হেলাল (উপস্থিত), মো: বেলাল (পলাতক), আব্দুল আওয়াল (উপস্থিত)
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সমাজকর্মী নুরুল হক এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িত থাকতেন এবং সমাজের সালিশ করতেন। মামলার প্রধান আসামী মাসুমের সাথে স্থানীয় ফরিদ মিয়ার দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। প্রধান আসামী মাসুম দীর্ঘদিন ধরে ফরিদ মিয়ার ১২ শতক জায়গা জোরপূর্বক দখল করে ভোগ করে আসছিলেন। পরে নূরুল হক সালিশের মাধ্যমে ফরিদ মিয়ার ১২ শতক জায়গা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য মাসুমকে বিপক্ষে রায় দেয়। এই রায়ে ক্ষুব্ধ হয় মাসুম।
২০১১ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারী বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় কুমিল্লা থেকে বাড়িতে ফেরার পথে সবুজপাড়া শিলদাই রাস্তায় পৌছালে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে রিক্সাযোগে আসামীরা ঘটনাস্থলে এসে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে নুরুল হকের উপর অর্তকিত হামলা করে। মামলার প্রধান আসামী মাসুম ভল্লম দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্য নুরুল হকের বুকে ৪ বার মারাত্মকভাবে জখম করে। আসামী তাজুল ইসলাম, মোস্তাফা, সুমন মাস্টারসহ অন্যান্য আসামীরা মিলে নুরুল হকের শরিরের বিভিন্ন অংশে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। এতে ঘটনাস্থলে মারা যায় নুরুল হক। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
এই ঘটনায় নিহত নুরুল হকের ছেলে শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৭ই ফেব্রুয়ারী ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামায় আরো ১০/১৫ জন আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।
এই বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি মোহাম্মদ জাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নুরুল হক হত্যা মামলার এজাহারে মোট ২২ জন আসামি ছিল। পরবর্তীতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন। রায় প্রদানের সময় আদালতের এজলাসে ১১ জন আসামি উপস্থিত ছিলেন, অপর ৭ আসামি পলাতক রয়েছে। মামলার বিচার চলাকালীন সময়ে ২ আসামি মৃত্যুবরণ করেন এবং ২ জনকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন বিচারক। এ মামলায় মোট ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।