সদ্য ইদ গেছে, পয়লা বৈশাখ-বিহুর মতো উৎসবের প্রস্তুতিতে বিভোর ছিল গোটা ভারত। হঠাৎ করেই তাল কাটে রোববার (১৪ এপ্রিল) ভোরে। সালমান খানের মুম্বাইয়ের বাড়ির সামনে ভোর ৫টা নাগাদ ৪ রাউন্ড গুলি চালায় অজ্ঞাত পরিচয়ের দুই ব্যক্তি। সঙ্গে সঙ্গে নড়েচড়ে বসে মুম্বাই পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে মুম্বাই পুলিশ জানিয়েছে, বলিউড অভিনেতা সালমান খানের বান্দ্রার বাসভবনে হামলার পরিকল্পনা করেছিল গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ডান হাত। সালমান খানের বাড়ির বাইরে যে দু’জনই গুলি চালিয়েছিল, তারা লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সঙ্গে যুক্ত।
সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, দুই বন্দুকধারীর মধ্যে একজন অভিনেতার বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালান। সন্দেহভাজন দু’জনেই বাইকে থাকাকালীন ব্যাকপ্যাক নিয়ে ছিলেন, পরিচিতি গোপনের জন্য টুপি পরা ছিল।
ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর দাবি, লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাই আনমোল বিষ্ণোই এই কাজের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত গ্যাংস্টার রোহিত গোদারার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, গোদারাকে তার বিশাল নেটওয়ার্ক থেকে পেশাদার শ্যুটার নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সালমানের বাড়ির সামনে এলোপাতাড়ি গুলি চালানোর জন্য।
ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে হামলার দায় স্বীকার করে আনমোল বিষ্ণোই। মুম্বাই ক্রাইম ব্রাঞ্চ ভিপিএন সংযোগের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, অজ্ঞাত পরিচয়ের দুই বন্দুকধারীর মধ্যে একজন গুরুগ্রামের বাসিন্দা এবং তারা রোহিত গোদারার সঙ্গে যুক্ত। গত মার্চে গুরুগ্রামের ব্যবসায়ী সচিন মুঞ্জলের খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত এই সন্দেহভাজন। গোদারা মার্চ মাসে শচীন মুঞ্জাল হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন। তিনি গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই, তার ভাই আনমোল ও গোল্ডি ব্রারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী।
গত বছরের মার্চ মাসে সালমান খানকে হুমকি দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার একটি ই-মেইল আসে। ভাইজানের পরিণতিও হবে সিধু মুসেওয়ালার মতো, লেখা ছিল সেই ই-মেইলে। যার পরে মুম্বাই পুলিশ লরেন্স বিষ্ণোই ও গোল্ডি ব্রারের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০-বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ৫০৬-২ (অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন) এবং ৩৪ (সাধারণ উদ্দেশ্য) ধারায় এফআইআর দায়ের করে।
প্রশান্ত গুঞ্জলকর নামে এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে ওই এফআইআর দায়ের হয়। আর্টিস্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির মালিক প্রশান্তই সালমানের বাড়িতে আসা ওই হুমকি ই-মেইল প্রথম দেখেছিলেন।
মূলত কৃষ্ণসার হরিণ শিকার মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার জেরেই সালমানের ওপর রোষ লরেন্স বিষ্ণোই। রাজস্থানের এই গ্যাংস্টারের জাতির মানুষদের কাছে ভগবানের আসনে রয়েছে কৃষ্ণসার হরিণ। তাই কিশোর বয়স থেকেই সালমানকে খতম করার শপথ নিয়েছেন তিনি। ২০১৯ সালে সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে সালমানকে শেষ করার কথা বলেন বিষ্ণোই। তবে, হামলার ঘটনাকে পাত্তা দিতে না-রাজ ভাইজান।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) নিজের ফিটনেস ব্র্যান্ড ‘বিয়িং স্ট্রং’ দুবাইতে শুরু করার ঘোষণা করেছেন সালমান, দিয়েছেন ভিডিও বার্তা। খবর, নিজের টিমকেও নিয়ম মতো সব কাজ হয়। সিনেমার শ্যুটিং না থাকলেও বিজ্ঞাপনের শ্যুটিং রয়েছে বেশকিছু, শিডিউল মেনেই তা করতে চান তারকা।