ভারি বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে গোমতী ও সালদা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রোপা আউশ, আমন ধানের বীজতলা, সদ্য রোপণ করা আমন ধান এবং বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৯০ কোটি টাকার বেশি বলে জানা গেছে।
শনিবার (৩১ আগস্ট) ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
উপজেলার কৃষি বিভাগ জানায়, ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে গোমতী ও সালদা নদীর বাঁধ ভেঙে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে মালাপাড়া, সাহেবাবাদ, শশীদল, চান্দলা, দুলালপুর, শিদলাই, মাধবপুর ও সদর ইউনিয়নের ফসলি জমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মোট ৩ হাজার ৭৭২ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
এর মধ্যে রোপা আউশ ধান ২ হাজার ৬৫০ হেক্টর, আমন বীজতলা ১৪৮ হেক্টর, রোপা আমন ৮৭৬ হেক্টর এবং শাকসবজি ৯৮ হেক্টর জমিতে ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। এছাড়াও ১ হাজার ২৬০ হেক্টর জমির ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্যার পানিতে ডুবে গেছে উপজেলার বিভিন্ন ফসলি মাঠ। এতে প্রান্তিক কৃষকরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কৃষকদের মধ্যে কেউ কেউ পানির নিচ থেকে আধাপাকা আউশধান সংগ্রহ করতে দেখা গেছে, তবে তীব্র স্রোতের কারণে ফসল কাটা বেশ কষ্টকর হচ্ছে।
দুলালপুর এলাকার কৃষক আনোয়ারুল ইসলাম জানান, তার ৫ একর জমির আউশ ধান ও আমন চারা বন্যায় নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তার প্রায় ৩ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। মহালক্ষীপাড়া এলাকার ফারুক আহমেদ বলেন, তার ৬০ শতক জমির পাকা আউশ ধান বন্যার পানিতে ডুবে গেছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাসুদ রানা জানান, আকস্মিক এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। পানি নেমে গেলে পুরোপুরি ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা সম্ভব হবে।