কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে সৃষ্ট সাম্প্রতিক বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে, পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় ১৬০ কিলোমিটার কাঁচা ও পাকা সড়ক বিধ্বস্ত হয়েছে। বন্যায় চারটি কালভার্টও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে প্রায় শত কোটি টাকার সম্পদহানি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোতে যানচলাচল বন্ধ রয়েছে, এবং স্থানীয় বাসিন্দারা বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে যাতায়াত করছেন। সামান্য বৃষ্টিতেও সড়কগুলোর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়, যার ফলে অসুস্থ ব্যক্তি, বয়স্ক মানুষ এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে মারাত্মক অসুবিধা পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বন্যার পানিতে বিভিন্ন সড়কের পিচ উঠে গিয়ে বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে এবং কোথাও কোথাও ৫ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত মাটি সরে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নানুয়ার বাজার-মহিষমারা-শিকারপুর বুরবুড়িয়া সড়কটি, যেখানে প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে।
বুরবুড়িয়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সড়কগুলোর অবস্থা এতটাই খারাপ যে স্বাভাবিক চলাচলও কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাতায়াতের সমস্যা এবং অর্থনৈতিক সংকট একত্রিত হয়ে মানুষের দুর্ভোগ বাড়িয়েছে। অসুস্থ ব্যক্তিদের জেলা সদরে নিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। তাঁরা দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
বুড়িচং-রাজাপুর-শংকুচাইল সড়কসহ অন্যান্য সড়ক যেমন নানুয়ার বাজার-ইন্দ্রবতী, ভেড়াজাল-শিকাপুর-বুরবুড়িয়া মাজার এলাকার সড়কগুলোও জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের প্রয়োজন। কিছু এলাকায় স্থানীয় যুবকেরা নিজেদের উদ্যোগে ইট ফেলে যাতায়াতের উপযোগী করার চেষ্টা করেছেন।
ষোলনল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. বিল্লাল হোসেন জানান, তাদের এলাকার রাস্তাগুলো ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং উপজেলা সদরের সঙ্গে সংযোগ সড়ক ভেঙে পড়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে অর্থের প্রয়োজন। বুড়িচং সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন জানান, এ বছরের বন্যায় যেভাবে সড়কগুলো ধ্বংস হয়েছে, তা ইতিহাস হয়ে থাকবে।
এলজিইডি বুড়িচং উপজেলা প্রকৌশলী আলিফ আহাম্মেদ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামতের কাজ জরুরি ভিত্তিতে শুরু করা হয়েছে।
