গোমতী নদী ও সালদা নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা। বন্যার রেশ এখনো কাটেনি। তবে বন্যার পানি উপজেলার গ্রামীণ সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক থেকে নেমে গেছে।
পানি নেমে যাওয়ায় ভেসে উঠেছে সড়কের ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ভয়াবহ বন্যার তাণ্ডবে এ উপজেলার গ্রামীণ সড়কসহ বিভিন্ন সড়কে ৮৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল (এলজিইডি) কার্যালয় সূত্র জানায়, ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে এ উপজেলার ১৪১ কিলোমিটার পাকা সড়কের মধ্যে ৯২ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও গ্রামীণ মাটির সড়কও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে এ উপজেলায় সড়কে ৮৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার এ উপজেলায় ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, মাছের ঘের এবং পুকুরসহ উপজেলার অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপজেলার গ্রামীণ সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে গিয়ে ও বন্যার পানির তীব্র স্রোতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব সড়কে যান চলাচল কষ্টদায়ক হয়ে উঠেছে। তবে যেসব সড়ক ভেঙে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সেসব স্থানে দেখা গেছে স্থানীয় তরুণ ও যুবসমাজের উদ্যোগে আপাতত যান চলাচলের উপযোগী করতে সংস্কারকাজ চলছে।
আবার কোথাও কোথাও উপজেলা প্রশাসন, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রসমাজের উদ্যোগে সাময়িকভাবে সড়ক মেরামতের কাজ চালানো হচ্ছে। এতে কিছু কিছু সড়কে যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি ঘটেছে। তবে সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে যান চলাচলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো যতটা দ্রুত সম্ভব সংস্কার করার।
স্থানীয়রা জানান, ভয়াবহ বন্যায় উপজেলার অধিকাংশ সড়ক তলিয়ে গিয়েছিল। তলিয়ে যাওয়া সড়কের মধ্যে বড়ধুশিয়া-শশীদল সড়ক, ব্রাহ্মণপাড়া-হরিমঙ্গল সড়ক, চান্দলা-দেউস সড়ক, মালাপাড়া-রামনগর-অলুয়া সড়ক ও উপজেলার গোপালনগর সড়কের বেশকিছু জায়গা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়াও উপজেলার অন্যান্য গ্রামীণ সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার ফলে স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। উপজেলার মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো শিগগিরই সংস্কার করা প্রয়োজন।
উপজেলার শশীদল ইউনিয়নের নাগাইশ এলাকার বাসিন্দা গাজী মো. রুবেল বলেন, বন্যায় বড়ধুশিয়া-শশীদল সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ সড়কে যোগাযোগব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। তবে সড়ক থেকে পানি নামার পর সড়কটিতে সাময়িকভাবে যোগাযোগব্যবস্থা সচল করতে আমরা এলাকার তরুণ ও যুবকরা মিলে কাজ করেছি। এখন এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। তবে এ সংস্কার সাময়িক, শিগগিরই এ সড়কের কাজ করতে হবে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মুহাম্মদ আবদুর রহিম বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো পরিদর্শন করেছি। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর সংস্কার চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। অধিক ক্ষতিগ্রস্ত ৩৬ কিলোমিটার পাকা সড়ক সংস্কার করতে ২০ কোটি টাকার চাহিদা দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, খুব শিগগিরই আমরা তা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব। এ ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য সড়কগুলো আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে সরকারি সহযোগিতায় সংস্কার করা হবে।