কুমিল্লাবুধবার, ৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

পাঁচ দিনেও উদ্ধার হয়নি কুমিল্লায় চুরি হওয়া নবজাতক

প্রতিবেদক
Palash Khandakar
আগস্ট ১৮, ২০২৩ ১২:৪১ অপরাহ্ণ
Link Copied!

স্টাফ রিপোর্টার:

কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতাল থেকে এক নবজাতক চুরির পাঁচ দিন পার হলেও তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। গত ১৩ আগস্ট সকাল ১০টায় সদর হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

চুরি হওয়া নবজাতক কুমিল্লা সদর উপজেলার বারোপাড়া এলাকার জসিম উদ্দিন ও আয়েশা বেগম দম্পতির সন্তান। ওই নবজাতক হাসপাতালেই জন্ম নেয় এবং হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল।

এদিকে, সন্তান হারানোর শোকে ভেঙে পড়েছেন মা-বাবাসহ স্বজনরা। এ ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে ওই হাসপাতালের অন্য শিশু ও নবজাতকদের স্বজনদের মাঝে।

হাসপাতালে নবজাতক চুরির ঘটনা জানার পর অনেকেই বাড়ি থেকে অতিরিক্ত আত্মীয়স্বজন এনেছেন। তারা নবজাতকের নিরাপত্তার জন্য হাসপাতালে অবস্থান করছেন বলে জানান। এ ছাড়াও অনেকে শিফট করে হাসপাতালে নবজাতকের সঙ্গে থাকছেন।

নবজাতক চুরির ঘটনার পর কুমিল্লা সদরের কালিরবাজার ইউনিয়নের মোহাম্মদ রাব্বি ওই হাসপাতালে সাত জন আত্মীয় নিয়ে এসেছেন। পালাক্রমে তারা তিন দিন ধরে নবজাতকের পাহারায় ব্যস্ত। তিনি বলেন, হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো। তবে ভয় ছাড়ছে না। তাই তিনি ও তার স্বজনরা ব্যক্তিগতভাবেও পাহারা দিচ্ছেন। হাসপাতাল থেকেও বাড়তি সতর্কতার কথা বলা হয়েছে। তাই রাতে দরজা বন্ধ করেই ঘুমান তারা।

বুধবার চুরি হওয়া নবজাতকের বাবা জসিম জানান, ‘সোমবার আমরা হাসপাতাল থেকে চলে এসেছি। এরপর থেকে আমার স্ত্রী আরও বেশি ভেঙে পড়েছেন। সে এখনও আমার বাবুর কাঁথা জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। তার কান্না আটকাতে পারছি না।’

তিনি হাসপাতালের নিরাপত্তার বিষয়ে জানান, ‘হাসপাতালের অনেক সিসি ক্যামেরা নষ্ট। অনেক মানুষের ভিড়ে কত অপরাধ হয়। সিসি ক্যামেরা সচল না থাকায় অনেক ঘটনাই আড়ালে থাকে। আমার হারিয়েছে, আমি বুঝি এটার কষ্ট। অন্য কোনও বাবা-মা যেন এমন কষ্ট না পান।’

কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আব্দুল করিম খন্দকার জানায়, ‘স্বজনদের হাত থেকে শিশু চুরি হয়েছে। এটি স্বজনদের বিষয়। এখানে আমাদের কী করার! এ ঘটনার পর থেকে আমরা হাসপাতালে বাড়তি সতর্কতা জারি করেছি।’

সিসিটিভি সচল না থাকার বিষয়ে তিনি জানান, ‘আমাদের অনেক বড় ক্যাম্পাস। এটি চলমান প্রক্রিয়া। আর যেন এমন ঘটনা না ঘটে সেজন্য রোগীদের সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।’

কুমিল্লার পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান জানান, ‘চুরির পর থেকে এ ঘটনায় কাজ করছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও জেলা পুলিশের একাধিক টিম। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করেছি। যা যা করা দরকার জেলা পুলিশ করছে। আশা করছি শিগগিরই সুফল পাওয়া যাবে।’

উল্লেখ্য, কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতাল থেকে ১৩ আগস্ট চুরি হয় কুমিল্লা সদর উপজেলার বারোপাড়া এলাকার জসিম উদ্দিন ও আয়েশা বেগম দম্পতির নবজাতক সন্তান। চিকিৎসক দেখানোর জন্য জসিমের শাশুড়ি টিকিট কাউন্টারে আসেন। সেখানে একজন নারী তাকে টিকিট কেটে দেওয়ার কথা বলে নবজাতককে কোলে নিয়ে পালিয়ে যায়।