ডেস্ক রিপোর্ট : চাঁদপুর সরকারি কলেজে উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাফিস উল হক সিফাত। এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগেই তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) স্নাতকে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
বুধবার (১৫ মার্চ) এমআইটি থেকে পাঠানো এক ই–মেইলে নাফিসের ভর্তির সুযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এই খবরে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে চাঁদপুরসহ সারাদেশের শিক্ষাঙ্গনে।
শিক্ষক মা-বাবার সন্তান নাফিস। থাকেন চাঁদপুর শহরের চেয়ারম্যান ঘাট এলাকায় ভাড়া বাসায়। নাফিসের বাবা মো. নাসির উদ্দিন মতলব রয়মনেনসা মহিলা কলেজের শিক্ষক। আর মা কামরুন নাহার হাজীগঞ্জ মডেল কলেজে শিক্ষকতা করেন। নাফিসের গ্রামের বাড়ি একই জেলার মতলব দক্ষিণের নওগাঁ গ্রামে।
গতকাল (১৭ মার্চ) সকালে চাঁদপুর সরকারি কলেজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নাফিসকে ফুল দিয়ে বরণ নেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। এসময় চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন আহমেদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নাফিসের প্রশংসা করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নাফিস শুধু চাঁদপুরের নয়, পুরো বাংলাদেশের গর্ব। কারণ, নাফিস এ দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। আমি সব সময় তার পাশে থাকব। আশা করি, সামনের দিনগুলোতে সে আরও এগিয়ে যাবে।’
চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর অসিত বরণ দাস বলেন, ‘নাফিস খুবই মেধাবী ছাত্র। সে আমাদের কলেজের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। এ বছর সে এইচএসসি পরীক্ষার্থী। নাফিস এমআইটিতে চান্স পেয়েছে। খুব কোয়ালিফাইড হলে ওই ছাত্র এইচএসসি পাস করলো কি করলো না- বিশ্বের বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে অনেক ক্ষেত্রে সেটি মুখ্য বিষয় নয়। তাদের কাছে মেধাই গুরুত্ব পায়। অতি মেধাবীদের তারা এভাবেই বেছে নেয়।’
তিনি বলেন, ‘নাফিসের এ অর্জন দেশের জন্য গর্বের বিষয়। কারণ, কতটা মেধাবী হলে এখনও একটি ছেলে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেনি অথচ তাকে এমআইটিতে ভর্তি হওয়ার জন্য ইনভাইট করা হয়েছে।’
নাফিস এর আগে ২০২২ সালের অক্টোবরে ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিয়াড ইন ইনফরমেটিক্সে (আইওআই) বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে ব্রোঞ্জ পদক অর্জন করেন।
বিশ্বসেরা বিশ্ববিদ্যালয় এমআইটির মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ কীভাবে অর্জন হলো- এমন প্রশ্নের জবাবে নাফিস বলেন, ‘কোনো কিছুই আসলে অসম্ভব নয়। চেষ্টা থাকতে হবে, আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। ওরা আসলে দেখতে চায় পড়ালেখায় কতটা ভালো, মানুষ হিসেবে কেমন, কোনো বিষয়ে আগ্রহ আছে কিনা শিক্ষার্থীর, কীভাবে সমস্যার সমাধান করছে ইত্যাদি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছোটবেলা থেকে স্বপ্ন ছিল কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করার। সেই লক্ষ্য নিয়ে আমি সব সময় বিভিন্ন অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করতাম। এ ছাড়া আমি সব সময় বিখ্যাত ব্যক্তি ও গুণি স্যারদের অনুসরণ করতাম।’