ডেস্ক রিপোর্ট:
কুমিল্লার দেবীদ্বারে চাঞ্চল্যকর করিম ভূঁইয়া হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন ৪ ঘাতক। গতকাল শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার আমলি আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেন তারা। আজ রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবীদ্বার থানার ওসি সামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ।
পুলিশ জানায়, নিখোঁজের এক মাস পাঁচ দিন পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের শ্বশুরবাড়ির একটি টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক হাত-পা বাঁধা অবস্থায় করিম ভূঁইয়ার (৪৮) গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত উপজেলার বড়শালঘর গ্রামের মন্ত্রীবাড়ি এলাকার মৃত আবুল কাশেম ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি গত ১৩ আগস্ট সকাল থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
এ ঘটনায় ঘাতক স্ত্রী তাছলিমা বেগম ও তার তিন ভাই ইসরাফিল, গোলাম হাক্কানী ও মোজাম্মেল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
পরে গতকাল শনিবার বিকেলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামাল উদ্দিনের আদালতে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
পুলিশের তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ আগস্ট রাতে স্ত্রী তাছলিমা বেগমের পরিকল্পনায় মাদক সেবনের লোভ দেখিয়ে করিমকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেন শ্যালক ইসরাফিল। সেখানে প্রথমে তিন ভাই মিলে তাকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত করেন। এ সময় তার মাথা থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এ সময় স্ত্রী তাছলিমা সেই রক্ত মুছে ফেলেন। পরে বড় ভাইয়ের বিল্ডিংয়ের টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ফেলে দেওয়ার কথা বলা হয়। তিনি রাজি না হওয়ায় প্রথমে মরদেহটি বাড়ির পাশের খালে ফেলে দেওয়া হয়। সকালে মরদেহ ভেসে উঠলে আবারও স্ত্রী এবং ভাইয়েরা মিলে খাল থেকে মরদেহ ওপরে তুলে আনেন। পরে হাত-পা বেঁধে বড় ভাইয়ের টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে মরদেহটি ফেলে দেওয়া হয়।
দেবীদ্বার থানার ওসি সামছুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, ‘স্ত্রী তাছলিমার পরিকল্পনায় তিন ভাইসহ চারজনে মিলে তাকে হত্যা করেন। মাদকের লোভ দেখিয়ে ভালো ব্যবহার করে তাকে শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে নিহতের ভাই আমির হোসেন থানায় সাধারণ ডায়েরি করলে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে। পরে সন্দেহভাজন আসামিদের ওপর নজরদারি ও গ্রেপ্তারের ভিত্তিতে মরদেহ উদ্ধার এবং হত্যার রহস্য উদঘাটন করা হয়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আসামিরা জানিয়েছেন করিম প্রায়ই স্ত্রী তাছলিমা বেগম ও মেয়েকে পাশবিক নির্যাতন করতেন। এতে তারা অতিষ্ঠ হয়ে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটান।’