কুমিল্লাশনিবার, ১২ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

জিআই স্বীকৃতি পেলো কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী ‘খাদি’

প্রতিবেদক
Palash Khandakar
মে ২, ২০২৫ ৪:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!


ডেস্ক রিপোর্ট:

দীর্ঘদিন পর ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী খাদি কাপড়। এতে খুশি খাদি ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা। ৩০ এপ্রিল রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

দেশজুড়ে খ্যাতি রয়েছে হাতে বোনা বিশেষ এই কাপড়ের। মিহি সুতায় দৃষ্টিনন্দন, আরামদায়ক পোশাক হওয়ায় তরুণ থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত সবার কাছে পছন্দের শীর্ষে থাকে।

খাদির পাঞ্জাবি, শাড়ি, থ্রি-পিস, ফতুয়া, শার্ট ও বিছানার চাদরসহ বাহারি ডিজাইনের বিভিন্ন পোশাক রয়েছে। নামীদামী ফ্যাশন শপে খাদি কাপড় আরও বৈচিত্র্য ও আকর্ষণীয় করে বাজারজাত করা হচ্ছে। খাদি এখন শৈল্পিকতার ছোঁয়ায় দেশ-বিদেশে সমাদৃত।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত প্রায় দুই থেকে আড়াইশ খাদি পোশাকের দোকান রয়েছে।

খাদি ভবনের সত্ত্বাধিকারী সানাই দাশগুপ্ত বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে খাদি শিল্পে নান্দনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। দেশ-বিদেশে যাচ্ছে খাদির বিভিন্ন পোশাক। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। দেরিতে হলেও অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আমরা খুশি।

গ্রামীণ খাদিঘরের মানিক মিয়া বলেন, খাদির স্বীকৃতির খবর জেনে আমরা আনন্দিত এবং যারা এজন্য কাজ করেছেন তাদের কাছেও কৃতজ্ঞ। আশা করছি এখন থেকে দেশ-বিদেশে কুমিল্লার খাদি কাপড়ের চাহিদা আরও বাড়বে।

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন।

খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয়। যার কারণে এর নাম খদি বলে নামকরণ করা হয়।

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদি শিল্প সংকটে পড়ে। পরে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান। অবশেষে জিআই স্বীকৃতি খাদিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিলো।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। আমরা আশাবাদী মৃৎশিল্পটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে।