জামালপুর জেলা কারাগারে বন্দিদের দুপক্ষের সংঘর্ষে ৬ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন জেলার, কারারক্ষীসহ ১০ জন। বৃহস্পতিবার দুপুরে কারাগারের ভেতরে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। বর্তমানে কারাগারের পরিস্থিতি পুরোটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ।
নিহত বন্দিরা হলেন- আরমান, রায়হান, শ্যামল, ফজলে রাব্বি বাবু, জসিম ও রাহাত। নিহতরা সবাই জামালপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত ৫ বন্দি এবং ৩ কারারক্ষীকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে কোনো বন্দি পালাতে পারেনি বলেও দাবি জেলারের। কারাগারে সংঘর্ষের খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলা কারাগারের আশপাশ এলাকা ও জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে বন্দিদের স্বজনদের ভিড় বাড়তে থাকে। এ সময় তাদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে।
জেলার আবু ফাতাহ জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে কারাগারের ভেতরে বন্দিদের দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষ ফেরানোর সময় বন্দিরা প্রথমে জেলারকে মারধর ও জিম্মি করে কারাগার থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছোড়ে কারারক্ষীরা। পরে বিক্ষুব্ধ বন্দিরা কারাগারের ভেতরে কারা হাসপাতাল, জেলারের কক্ষসহ কারাগারের প্রধান গেটের ভেতরে একটি গেট ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় বন্দিদের কাছে জিম্মি হয় ১৪ কারারক্ষী।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস একযোগে কাজ করে দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত ৩টায় কারাগারের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয় কারা কর্তৃপক্ষ।
জেলার আবু ফাতাহ বলেন, কারাগারের ক্ষতিগ্রস্ত ফটক ও ভেতরে অন্যান্য ভবন দ্রুত মেরামতের জন্য গণপূর্ত বিভাগ কাজ শুরু করেছে। জামালপুর জেলা কারাগারে রয়েছেন ৬৬৯ জন বন্দি। এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত বন্দি রয়েছেন ১০০ জন। এছাড়া এ কারাগারে কোনো জঙ্গি নেই বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান জানান, কারাগারে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত ৬ জনের ময়নাতদন্ত চলছে এবং আহত ৫ বন্দি জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।