কুমিল্লাসোমবার, ১৬ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

খেজুর খেয়ে রোজা ভাঙা হয় কেন?

প্রতিবেদক
Palash Khandakar
মার্চ ১, ২০২৫ ১:১৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!


ডেস্ক রিপোর্ট:

রমজানের ইফতারে খেজুর খাওয়ার রীতি অনেক পুরোনো। কখনও কি ভেবে দেখেছেন, কেন রোজা ভাঙার জন্য সবাই খেজুরটাই আগে মুখে দেন? মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর প্রিয় খাবারের মধ্যে একটি ছিল খেজুর। তিনি নিজেও ইফতার করতেন খেজুর খেয়ে। এর পিছনে ধর্মীয় গুরুত্বের পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক কারণও রয়েছে।

রোজায় দীর্ঘ সময় ধরে আমরা খাবার ও পানীয় থেকে বিরত থাকি। এতে পুষ্টির অভাবে আমাদের শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই শরীরে দ্রুত শক্তি ফিরে পেতে অনেকেই ইফতারে খেজুর খান। সারা দিন না খেয়ে থাকার পর আমাদের এমন কিছু খাবারের প্রয়োজন হয়, যা শরীরে পুষ্টি জোগাবে এবং কর্মশক্তি বাড়াবে। এ কারণেই রোজার সময় খেজুরের গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। নানা পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ খেজুরে রয়েছে ক্যালরি, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, আয়রন, ফসফরাস, পটাশিয়ামসহ নানা প্রাকৃতিক উপাদান।

ইফতারে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা:
১. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়:
খেজুরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া হৃৎপিণ্ডের জন্য খেজুর একটি নিরাপদ ও প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে কাজ করে।

২. ক্যান্সার প্রতিরোধ:
খেজুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং প্রাকৃতিক আঁশে পূর্ণ। এটি ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। যারা নিয়মিত খেজুর খান, তাদের ক্যান্সারের ঝুঁকি অনেক কম থাকে।

৩. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ:
খেজুরে থাকা আয়রন ও ফাইবার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এছাড়া খেজুর থেকে প্রচুর পটাসিয়াম পাওয়া যায়, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। মাত্র কয়েকটি খেজুর ক্ষুধার তীব্রতা কমিয়ে দেয় এবং পাকস্থলীকে কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে। অল্পতেই শরীরের প্রয়োজনীয় শর্করার ঘাটতি পূরণ করে।

৪. এনার্জি বৃদ্ধি:
খেজুরে প্রচুর পুষ্টিগুণ রয়েছে। এতে সুগারের পরিমাণ এত বেশি থাকে যে, এক কামড়েই অনেকটা এনার্জি পাওয়া যায়। খেজুরে আয়রন, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফাইবার, গ্লুকোজ, ম্যাগনেশিয়াম ও সুক্রোজ থাকে। খেজুর খাওয়ার মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে শরীরে এনার্জি বেড়ে যায়। সারা দিন উপোস করে শরীরে ক্লান্তি আসে, তা দূর করে এনার্জি জোগাতে খেজুর খুবই কার্যকর।

৫. অ্যাসিডিটি কমায়:
দীর্ঘ সময় উপোস থাকার কারণে অনেকের অ্যাসিডিটি হয়, যা থেকে অস্বস্তি সৃষ্টি হয়। খেজুর শরীরে অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।

৬. অতিরিক্ত খাওয়া নিয়ন্ত্রণ:
সারা দিন না খেয়ে থাকলে ইফতারের সময় অনেকেই বেশি খেয়ে ফেলেন। খেজুর খেয়ে উপোস ভাঙলে এর মধ্যে থাকা জটিল কার্বোহাইড্রেট হজম হতে বেশি সময় নেয়। এছাড়া ফাইবার থাকার কারণে পেট ভরা লাগে, ফলে বেশি খাওয়ার প্রবণতা কমে।

৭. হজমশক্তি উন্নত করে:
দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে হজমশক্তিতে সমস্যা হতে পারে। খেজুর শরীরে উৎসেচক ক্ষরণে সাহায্য করে, যা হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।

খেজুরের বিকল্প:
খেজুর হল রোজা ভাঙার সর্বোত্তম উপায়। তবে ইফতারে যদি খেজুর না পাওয়া যায়, তাহলে পানি পান করা উচিত। কারণ পানি এবং খেজুর উভয়ই শরীরের জন্য বিশুদ্ধ এবং স্বাস্থ্যকর।