কুমিল্লাবৃহস্পতিবার, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কুমিল্লায় ১ বছর ৮ মাস পর স্বজনরা খুঁজে পেলেন মমতাজ বেগম(৬৬)কে

প্রতিবেদক
CUMILLA PRESS
সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২১ ৩:১৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ইসতিয়াক আহমেদ 

কুমিল্লা দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা থেকে হারিয়ে যাওয়া মমতাজ বেগম ওরফে মনোক্কা (৬৬) কে ১ বছর ৮ মাস পর খুঁজে পেলেন তার পরিবার। গত বছরের ১৩ জানুয়ারী ঢাকা পল্লবীর মুসলিম বাজার এলাকার বাসিন্দা মমতাজ বেগম তার বাসা থেকে নিখোঁজ হয়।

এই ঘটনায় গত বছরের ২১ জানুয়ারী তার ভগ্নীপতি মোঃ সেলিম সিকদার পল্লবী থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন (ডায়েরী নং-১৮৭৫)।

চলতি বছরের ২০ জুলাই রাত সাড়ে ১২টায় কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে একটি দ্রুতগামী মোটর সাইকেলের ধাক্কায় মমতাজ বেগমের পা ভেঙ্গে সড়কে পড়ে থাকলে পথচারিদের সহায়তায় মানষিক ভারসাম্যহীন মমতাজ বেগমকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আরিফুর রহমানকে জানায় সড়ক দূর্ঘটনায় আহত মমতাজ বেগমের শারিরীক অবস্থা খুব খারাপ। শরীরে মারাত্নক স্কিন ইনফেকশন এবং পা ভাঙ্গা। তিনি মানুষিক ভারসাম্যহীন। কথা বলতে পারছে না। নিজের বা পরিবারের পরিচয় দিতে পারছে না। তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আরিফুর রহমান এই বিষয়ে শুনে থানা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ আহম্মদ কবিরের সাথে কথা বলে মমতাজ বেগমকে উন্নত চিকিৎসা প্রদান করার জন্য বলেন।

দীর্ঘ ৫৫ দিন ধরে দেবিদ্বার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২নং বেডে মমতাজ বেগমকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ছিলেন। মমতাজ বেগমের শারিরিক অবস্থা কিছুটা উন্নিতি হলে মমতাজ বেগম একটু একটু করে কথা বলতে শুরু করে।
তখন তার কাছে পুলিশ বাসার ঠিকানা জানতে চাইলে ঢাকার পল্লবীর কথা বলে।

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আরিফুর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দেবিদ্বার পুলিশের ফেইসবুকে মমতাজ বেগমের পরিচয় জানতে চেয়ে একটি পোস্ট দেয়। এবং ঢাকা পল্লবী থানায় যোগাযোগ করে। পরে পল্লবী থানা থেকে দেবিদ্বার থানায় যোগাযোগ করে জানানো হয় এমন একটি নিখোঁজ জিডির কথা। ওসি আরিফুর রহমান পল্লবী থানায় মমতাজ বেগমের ছবি পাঠালে পল্লবী থানা থেকে মমতাজ বেগমের পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হয়।

বোনের সংবাদ পেয়ে মমতাজ বেগমের ছোট ভাই মোঃ রুহুল আমীন ও ছোট ভগ্নীপতি এস এম সোলায়মান আহমেদ মঙ্গলবার সকালে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। স্বজনদের দেখা পেয়ে মমতাজ বেগম আনন্দে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আরিফুর রহমানের সহায়তায় মমতাজ বেগমকে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এই সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ মঞ্জুর হোসেন বলেন, মমতাজ বেগমের পায়ের ভাঙ্গা অংশ এখনো জোড়া লাগেনি, তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। তখন ওসি আরিফুর রহমান মমতাজ বেগমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করতে বলেন। কিন্তু তার পরিবার তাকে ঢাকা
পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করবে বলে জানান।

পরিবারের অনুরোধে মমতাজ বেগমকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে দেবিদ্বার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আরিফুর রহমান, সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আবু তাহের, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ মঞ্জুর হোসেন, ডাঃ আসমা আক্তার এবং সাংবাদিকবৃন্দ।

এই বিষয়ে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আরিফুর রহমান বলেন মমতাজ বেগমকে আহত অবস্থায় পাওয়ার পর থেকে মানবিকতার কথা চিন্তা করে প্রথমে তার উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করেছি।এবং তার পরিবারকে খোঁজে বের করে মমতাজ বেগমকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি।