নিজস্ব প্রতিবেদক,
কুমিল্লায় ঘুমন্ত অবস্থায় লারকি দিয়ে পিটিয়ে প্রবাসী আনোয়ারের স্ত্রী ও ছেলেকে হত্যা করেছে তারই মেজো ভাই মীর হোসেনের ছেলে সাহেদ (১৪) বুধবার মধ্যরাতে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার পাঁচড়া গ্রামে বেপারী বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার পাঁচড়া গ্রামে বেপারী বাড়ির দুবাই প্রবাসী আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী নিপা আক্তার (২৭) এবং তার বড় ছেলে মুজাহিদ হোসেন (৭)।
হত্যাকারী সাহেদ হোসেন (১৪) মীর হোসেনের ছেলে। সাহেদ স্থানীয় একটি মাদ্রাসা ৭ শ্রেণির ছাত্র।
এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম থানার সহকারী পুলিশ সুপার চৌদ্দগ্রাম সার্কেল মো: জাহিদুল ইসলাম।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় দীর্ঘদিনের সম্পত্তি নিয়ে ভাগাভাগি ও পারিবারিক কোলাহল নিয়ে ছোট ভাই প্রবাসী আনোয়ার হোসেন ও মেজো ভাই প্রবাসী মীর হোসেনের পরিবারের সাথে বিরোধ ছিল। এই ক্ষোভের জেরে সাহেদ মঙ্গলবার(৪ই জুলাই) সন্ধ্যায় তার চাচী নিপার বাসায় লুকিয়ে ঢুকে সিড়ির কক্ষে আত্নগোপন করে থাকে। রাতে নিপা আক্তার পাশের বাড়ি দাওয়াত খেতে গেলে সাহেদ বাড়ি থেকে বের হয়ে মাদ্রাসার দিকে চলে যায়। মাদ্রাসার কাছাকাছি গিয়ে সে আবার তার চাচীর বাসায় ফিরে গিয়ে ভিতরে লুকিয়ে থাকে। নিপা দাওয়াত খেয়ে এসে বাসার মধ্যে টুকটাক কাজ করে। তখনও সাহেদ সিড়ির রুমে অপেক্ষা করতে থাকে। তারপর নিপা তার দুই ছেলেকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে রাত ২ টার সময় সাহেদ লাড়কি দিয়ে এলোপাতাড়ি নিপা ও তার ছেলে মুজাহিদকে আঘাত করে ছাদ দিয়ে গাছ বেয়ে নেমে মাদ্রাসায় চলে যায়। ঘটনার সময় চিৎকার শুনে প্রতিবেশী ও আত্নীয় স্বজনরা এসে দেখে নিপা ঘটনাস্থলে মারা গেছে। তখন আহত অবস্থায় মুজাহিদকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে মুজাহিদও মারা যায়।
এইদিকে ঘাতক সাহেদকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে না পেয়ে তার মা ও প্রতিবেশি অনেক খোজাখুজি করে। এবং যেই মাদ্রাসায় সে পড়ে সেখানেও খোজ করে সাহেদকে পায় না। ফজরের আযানের আগে রক্ত মাখা ভিজা জামা পড়ে মাদ্রাসায় গেলে মাদ্রাসার হুজুর সাহেদের পরিবারকে জানায়। তখন পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে।
এই বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম সহকারী পুলিশ সুপার সার্কেল মো: জাহিদুল ইসলাম জানান ঘটনার পরই আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন রুমগুলো তল্লাশি করি। সেখানে একটি কালো রংয়ের নামাযের টুপি পাই। পরিবারের সদস্যদের টুপিটি কার জিজ্ঞাসা করলে সাহেদের কথা বলে। এই মাদ্রাসার হুজুর সাহেদের যাওয়ার কথা বললে আমরা তাকে আটক করি। প্রাথমিকভাবে সাহেদ খুন করার বিষয়টি স্বীকার করেছে। কারণ হিসেবে পারিবারিক কোলাহলের কথা জানায়। এই ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি।