কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ায় আউশ ধান ঘরে তোলার ও আমন চাষের সময় ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কৃষকরা। উপজেলার অধিকাংশ ফসলি মাঠ তলিয়ে গেছে, ফলে ৫ হাজার ৩২ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে ২৯ হাজার ১৫০ কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯০ কোটি টাকারও বেশি।
তবে বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর কৃষকরা নতুন উদ্যমে আমন চাষে মাঠে নেমে পড়েছেন। কিছু মাঠে ইতিমধ্যে সদ্য রোপণ করা আমন ধানের চারা দৃশ্যমান হচ্ছে, যা বন্যার পর ফসলি মাঠের প্রাণ ফিরিয়ে দিচ্ছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ জানায়, দুই নদীর ভাঙনের কারণে বন্যায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আউশ ধান, আমন ক্ষেত এবং শাকসবজি নষ্ট হয়েছে। তবে পানি কমতে শুরু করায় কৃষকরা আমন আবাদের জন্য মাঠে কাজ করছেন। কৃষকরা দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন যাতে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেন। আশা করা হচ্ছে, নদী থেকে আসা পলিমাটি আমন আবাদের জন্য মঙ্গলজনক হবে। সরকারের পক্ষ থেকে দুই হাজার কৃষকের মাঝে কৃষি প্রণোদনা বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন ফসলি মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, কিছু মাঠে এখনও বন্যার পানি রয়ে গেছে, তবে যেখানে পানি সরে গেছে, সেসব মাঠে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তীব্র গরম উপেক্ষা করে তারা জমি প্রস্তুত ও ধানের চারা রোপণের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। তবে আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চারা সংকট দেখা দিয়েছে, ফলে কৃষকদের উচ্চ মূল্যে চারা সংগ্রহ করতে হচ্ছে।
মালাপাড়া ইউনিয়নের চন্ডিপুর এলাকার কৃষক রবি উল্লাহ জানান, বন্যায় জমিতে পানি জমে গিয়েছিল, ফলে আমন আবাদের সম্ভাবনা নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে এখন পানি কমে যাওয়ায় তারা জমি প্রস্তুত করছেন এবং আমন চারা রোপণ করছেন। তিনি আশা করছেন, এবারের ফলন ভালো হবে।
দুলালপুর ইউনিয়নের বেজুরা এলাকার কৃষক আবুল হোসেন বলেন, বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে তারা মাঠে কাজ করছেন। নতুন করে কোনো দুর্যোগ না হলে ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা বলেন, এ বছর ৫ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হবে। বন্যায় আমনের ক্ষেত ও বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, ফলে চারার সংকট দেখা দিয়েছে। তবে এ সংকট মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনছেন এবং সে অনুযায়ী উদ্যোগ নিচ্ছেন।