ডেস্ক রিপোর্ট:
রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আওয়ামী লীগ কখনও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেনি, বারবার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। তাই তাদের আর গণতন্ত্রের সুযোগ দেওয়া উচিত নয়।” মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিএনপি এই আলোচনার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, “২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এ দেশের নিরীহ মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, লাখো মানুষকে হত্যা করেছিল। কিন্তু পাকিস্তান আজও ক্ষমা চায়নি। অথচ একটি গোষ্ঠী এই ইতিহাসকেই অস্বীকার করে বলছে, ‘৭১-এ কিছুই ঘটেনি।’ বরং তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহায়তা করেছিল। আজ তারা আবার গলা ফুলিয়ে কথা বলছে। আমরা যেন এই ইতিহাস ভুলে না যাই।”
তিনি আরও বলেন, “শেখ হাসিনা জনগণের ক্ষোভের মুখে ভারতে পালিয়ে গেছেন। এটাই তাদের চরিত্র। যখন জনতা রাগান্বিত হয়, তখন তারা নেতাকর্মীদের অরক্ষিত রেখে পালিয়ে যায়। এবারও তাই করেছেন।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “দেশের মৌলিক সংস্কার শুরু করেছিলেন শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, পরে তা এগিয়ে নিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। বিএনপিই দেশের প্রকৃত সংস্কার এনেছে। আমরা ইতিমধ্যেই ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় কাঠামো সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি। ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া ২০৩০ সালের ভিশন উপস্থাপন করেছিলেন। অথচ বর্তমান সরকার সংস্কারের নামে নতুন নতুন পাহাড় এনেছে। আমরা সংস্কারের প্রস্তাব নিয়ে মতামত দিয়েছি, কিন্তু আমাদের মূল দাবি হলো—নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। এখন এই বিষয় নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু কুৎসিত শক্তি সক্রিয় হয়েছে, যারা সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। আমরা তা মানব না, কারণ সেনাবাহিনীই জাতির দুঃসময়ে পাশে দাঁড়ায়।”
তিনি বলেন, “বিএনপিই আন্দোলনের ভিত্তি তৈরি করেছে। হঠাৎ করে কোনো বিপ্লব হয়নি, বিএনপির নেতাকর্মীদের রক্ত ও সংগ্রামের মধ্য দিয়েই আন্দোলন গড়ে উঠেছে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চলছে, কিন্তু আমরা জানি, জনগণ আমাদের সাথে আছে। আগামীতে ইনশাআল্লাহ বিএনপিই রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য আমরা পূরণ করতে পারিনি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বারবার বাধার মুখে পড়েছি। শহিদ জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন, কিন্তু আওয়ামী লীগ তাকে অস্বীকার করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। অথচ জনগণ প্রমাণ করেছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তারা সরকার পরিবর্তন করতে পারে।”
বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার জন্য নানা অজুহাত তৈরি করা হচ্ছে। কেউ বলছে, স্থানীয় সরকার সংস্কার করতে হবে, আবার কেউ বলছে নির্বাচন পেছাতে হবে। কিন্তু জনগণ বুঝতে পারছে, এই ষড়যন্ত্রের লক্ষ্য কী। যতই চক্রান্ত হোক, জনগণই শেষ পর্যন্ত বিজয়ী হবে।”