দরিদ্র মা-বাবার পক্ষে সপ্তাহে ওষুধের জন্য ২৫০০ টাকা জোগাড় করা সম্ভব না। তাই মানসিক ভারসাম্যহীন ২৬ বছরের ছেলেকে বাঁশের খাঁচায় বন্দি করে রেখেছেন তারা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চককীর্তি ইউনিয়নের রানিবাড়ি-চাঁনপুর ঘোনটোলা গ্রামের হতদরিদ্র কৃষক মো. রইসুদ্দিন ও মোসা. পিয়ারা বেগমের ছেলে অমিত হাসান এই মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
জানা যায়, রইসুদ্দিন ও মোসা. পিয়ারা বেগমের চার ছেলের দুইজনই মানসিক ভারসাম্যহীন। এদের মধ্যে ছোট ছেলে মো. তামিমকে (১৭) বাইরে রাখলেও মেজ ছেলে অমিত হাসানকে (২৬) খাঁচাবন্দি করে রেখেছেন বাবা-মা।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে পরিবারের সদস্যরা জানান, জন্মের পর থেকেই এমন তারা দুই ভাই। কিন্তু বড়জন অমিত হাসান বাড়ির বাইরে গেলেই মানুষজনকে খামচে দেয়, মারধর করে। এজন্য তাকে বাঁশের খাঁচায় বন্দি করে রাখা হয়েছে।
তারা আরও জানান, নিয়মিত ওষুধ সেবনে এমন অস্বাভাবিক আচরণ করে না অমিত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে আমরা সপ্তাহে ২৫০০ টাকা কোথায় পাবো। তাই বাধ্য হয়েই খাঁচাবন্দি করে রাখতে হচ্ছে। তার থাকা, খাওয়া, ঘুম সবই বাঁশের খাঁচার মধ্যে।
রইসুদ্দিন জানান, আমার সংসার চলে গ্রামবাসীর সহায়তায়। টাকার অভাবে ছেলের চিকিৎসা করাতে পারছি না।
চককীর্তি ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, রইসুদ্দিনের পরিবারটি সত্যিই খুব অসহায়। তাদের জায়গা জমি তেমন কিছুই নেই। এদিকে কাঁধে পড়েছে দুই মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের ভার। এতে তারা এখন নিঃস্ব। তবে আমরা তাদের সঙ্গে সব সময় ছিলাম। আগামীতেও থাকবো। তাদের প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হয়েছে।
শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত জানান, বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। খুব দ্রুত রইসুদ্দিনের বাসায় গিয়ে সহায়তা করা হবে। আর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার দুই ছেলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।