ডেস্ক রিপোর্ট:
শেখ হাসিনার শাসনামলে অর্থপাচারসহ দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি করা শ্বেতপত্র প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের হাতে পৌঁছেছে। এ প্রতিবেদনকে ‘ঐতিহাসিক’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এটি চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রকাশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এটি (শ্বেতপত্রটি) আমাদের দেখাবে আমরা কী অবস্থায় অর্থনীতি পেয়েছি। জাতি এই নথি থেকে উপকৃত হবে।
শেখ হাসিনার শাসনামলে খোলাখুলিভাবে অর্থনীতিতে লুটপাট হওয়ার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ড. ইউনূস বলেন, আমাদের অনেকের সাহস ছিল না এটি প্রতিহত করার।
রোববার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে প্রধান উপদেষ্টার কাছে শ্বেতপত্রের প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হলে তিনি এসব কথা বলেন।
বিগত সরকারের শাসনামলের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত শ্বেতপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার সময়ে বছরে গড় ১৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে।
এছাড়া উল্লেখ করা হয়েছে, বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, লুটপাট এবং পরিসংখ্যানগত কারসাজির মাত্রা ছিল ভয়াবহ।
এ সময় কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করেছি এবং সরকারের কোনো প্রভাব ছিল না। শ্বেতপত্রটি ৩০টি অধ্যায় এবং ৪০০ পৃষ্ঠার বিশদ বিবরণীসহ প্রকাশিত হবে।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তারা ২৯টি বড় প্রকল্পের মধ্যে সাতটি বিশ্লেষণ করেছেন। প্রকল্পগুলোর প্রাথমিক ব্যয় ছিল ১ লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা, যা পরে ১ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়।
কমিটির অন্য সদস্য প্রফেসর একে এনামুল হক বলেন, গত ১৫ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ৭ লাখ কোটি টাকারও বেশি খরচ হয়েছে, যার ৪০ শতাংশ লুটপাট হয়েছে।
কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আবু ইউসুফ জানান, কর মওকুফের পরিমাণ ছিল দেশের মোট জিডিপির ৬ শতাংশ। এর পরিমাণ অর্ধেক কমালে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বাজেট দ্বিগুণ-তিনগুণ করা যেত।
‘ডিসেকশন অফ এ ডেভেলপমেন্ট ন্যারেটিভ’ শীর্ষক শ্বেতপত্র প্রতিবেদন শিগগির জনসাধারণের জন্য প্রকাশ করা হবে।